স্পেনের পুরুষ দলের সোনালি প্রজন্ম ২০১০ সালে বিশ্বকাপ জয়ের ১৩ বছর পর স্পেনের মেয়েদের হাতে ও উঠেছে বিশ্বকাপ ট্রফি। সিডনিতে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ওলগা কারমোনার একমাত্র গোলে ফাইনালে জিতে প্রথম বার ট্রফি জয়ের উৎসবে ভেসেছে স্পেনের মেয়েরা। বিশ্বকাপ ট্রফি জয়ের পর কোচ জর্জ ভিলদােকে কাঁধে তুলেছেন স্পেনের মেয়েরা। তবে ট্রফি জয়ে যে কোচকে ঘিরে এতোটা উৎসব, সেই কোচের বিপক্ষে স্পেন নারী ফুটবল দল কিন্তু বিদ্রোহ করেছিলেন। সেই বিদ্রোহীদের ক’জন কিন্ত বিশ্বকাপ জয়ী দলে প্রতিনিধিত্বও করেছেন।
এক সময়ে খেলেছেন বার্সেলোনা এবং রিয়াল মাদ্রিদ ইয়ুথ ক্লাবে। ২০০৯ সাল থেকে তরুণ বয়সে স্পেন অনূর্ধ্ব-১৭ও ১৯ দলের সহকারী কোচ হিসেবে শুরু কোচিং ক্যারিয়ার। ২০১৫ সাল থেকে স্পেন জাতীয় দলের হেড কোচ তিনি। জাতীয় দলে ৮ বছরের কোচিং ক্যারিয়ারে স্পেন নারী ফুটবলারদের কাছে ছিলেন অপ্রিয়। অতিরিক্ত পরিশ্রম এবং মানসিক চাপ তৈরি করেন ভিলদা। সে কারণে ফুটবলারেরা মাঠে নেমে নিজেদের সেরা দিতে পারেন না।এই অভিযোগে কোচের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্বকাপ থেকে নাম প্রত্যাহার করেছেন ১২ জন নারী ফুটবলার। তবে স্পেন নারী ফুটবলারদের অপছন্দের এই কোচের বিপক্ষে বিদ্রোহে লাভ হয়নি। উল্টো স্পেন ফুটবল সংস্থা কোচের পাশেই দাঁড়িয়েছেন।
জাতীয় দলের হয়ে প্রায় শততম ম্যাচ খেলতে চলা ইরেন পারেদেস বিদ্রোহটা শুরু করেছিলেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ১৫ জন ফুটবলার একসঙ্গে স্পেন ফুটবল সংস্থাকে তার বিরুদ্ধে ইমেইলে নালিশ করেছেন। সেই ১৫ জন ছিলেন আইতানা বোনমাতি, মারিয়োনা কালদেনতে, ওনা বাতলে, পাত্রি গুইজারো, মাপি লিয়ন, সান্দ্রা পানোস, ক্লদিয়া পিনা, লোলা গালার্দো, আইনহোয়া মোরাজা, নিরিয়া এইজাগিরে, আমিউপ সারিয়েগি, লুসিয়া গার্সিয়া, লিলা ওউহাবি, লাইয়া আলেকজান্দ্রি এবং আন্দ্রিয়া পেরেরা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, মহিলা দলে খেলার ফলে তাঁদের মানসিক অবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং শারীরিক অবনতি হয়েছে।
তবে ভুল বুঝতে পেরে ইমেল পাঠানো ১৫ জনের মধ্যে ৮ জন দলে ফিরে এসেছেন। এই অপ্রিয় কোচের তত্ত্বাবধানে এবার নারী বিশ্বকাপে বড় ধাক্কাও খেয়েছিল স্পেন। জাপানের কাছে হেরেছিল গ্রুপ রাউন্ডে ৪-০ গোলে। তবে এর পর কোচের রুদ্রমূর্তিতে বদলে গেছে স্পেন নারী ফুটবল দলের চেহারা। তার কোচিংয়েই অসাধ্য সাধন করেছে স্পেন। রয়েল স্প্যানিশ ফুটবল এসোসিয়েশন পাশে ছিল বলেই আস্থার প্রতিদান দিতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন জর্জ ভিলদা-‘আমি ফেডারেশন সভাপতির সভাপতির সমর্থনকে নির্দেশ করতে চাই। তিনি আমাকে সাহস জুুগিয়েছেন।আমরা যা করেছি তা অর্জন করা কঠিন। এই দলকে নিয়ে খুব গর্বিত। আমরা দেখিয়েছি কিভাবে আমরা খেলতে পারি। আমরা জেনেছি কিভাবে কষ্ট পেতে হয়। তাই আমরা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন।এখন সময় উদযাপন করার।’