বাংলাদেশের অভ্যুদয়, বাংলাদেশের বিকাশ এবং আজকে বাংলাদেশের অবস্থান সবই হলো আওয়ামী লীগের অবদান। কাজেই আওয়ামী লীগের ইতিহাস আর বাংলাদেশের ইতিহাস শেষ পর্যন্ত এক মোহনায় মিলিত হয়েছে। আগামী ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং আগামী ২৩ জুন ‘প্লাটিনাম জয়ন্তী’ পালন করতে যাচ্ছে দেশের প্রাচীন ও বৃহত্তম রাজনৈতিক এই সংগঠনটি। এই উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক দিন ক্ষণগুলো ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ করা-
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ২০০৯-১৩ মেয়াদে অর্থাৎ পাঁচ বছরে সরকারি ও বেসরকারি খাতে প্রায় দেড় কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণে সংশোধিত শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি দুই দফায় বৃদ্ধি করা হয়েছে। জিডিপিতে শিল্প ও সেবা খাতের অবদান বেড়েছে।
সফলভাবে ক্রিকেট বিশ্বকাপ অনুষ্ঠান। ক্রীড়াক্ষেত্রে সাফল্যের সূচনা। পরপর দুই বছরে বাংলাদেশের দুই তরুণের এভারেস্ট জয়। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বিশ্বের শীর্ষ দশে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। – নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু। ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসনে একাধিক উড়াল সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ দ্রুতগতিতে অগ্রসরমান।
ডিজিটাল দুনিয়ায় বাংলাদেশের অভিযাত্রা আজ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ৫ হাজার ২৭৫টি ডিজিটাল কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশে এখন মোবাইল সিম গ্রাহকের সংখ্যা ১৩ কোটির বেশি। ইন্টারনেট গ্রাহক ৫ কোটি ৭ লাখ ৭ হাজারের বেশি।
– বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের ভূমিকা পালন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ পুরস্কার লাভ।
পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে বিপুল সাফল্য অর্জিত। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি। ৪২ বছরের অমীমাংসিত মিয়ানমার ও ভারতের সাথে সমুদ্রসীমানা বিরোধ নিষ্পত্তির মধ্য দিয়ে নতুন সমুদ্রসীমা জয় করেছে বাংলাদেশ।
ভারতের সাথে স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন ও ছিটমহল বিনিময়ের ফলে দীর্ঘ ৬৮ বছরের মানবিক লাঞ্ছনা থেকে মুক্তি পেয়েছে ছিটমহলবাসী।
– বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি। ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর। জাতি কলঙ্কমুক্ত।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু। ইতোমধ্যে কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামান, সাকা চৌধুরী, মুজাহিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে। বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত। বিডিআর বিদ্রোহের শান্তিপূর্ণ সমাধান। সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ব্যর্থ।
সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক ১৯৭৫ পরবর্তী সামরিক আইন জারি, সামরিক ফরমান বলে সংবিধান সংশোধন ও জিয়া-এরশাদের সামরিক শাসনকে অবৈধ ঘোষণা। ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী গৃহীত। দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া ১৯৭২-এর সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদসহ মৌলিক রাষ্ট্রীয় নীতিমালা পুনর্বহাল। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ সংযোজিত।
২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার লক্ষ্যে বিএনপি-জামাত জোট সরকার উৎখাতের লক্ষ্যে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায়। আন্দোলনের নামে হিংসাশ্রয়ী ঘটনায় বহুপ্রাণহানি ঘটে। বিএনপি-জামাতের প্ররোচনায় হেফাজতে ইসলাম নামে একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও সারাদেশে ভয়াবহ তাণ্ডব চালায়। আওয়ামী লীগ ও সরকার এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়।
বিএনপি-জামাত জোট ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচন বর্জন এবং নির্বাচন বানচালের জন্য একই কায়দায় চেষ্টা চালায়। অসাংবিধানিক ধারা সৃষ্টির এই চেষ্টা ও ব্যর্থ হয়।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১২ জানুয়ারি তৃতীয় মেয়াদের জন্য শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। ইতোমধ্যে এই মন্ত্রিসভার দুই বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। ২০১৫ সালে খালেদা জিয়া ৯০ দিনব্যাপী অবরোধ চালিয়ে সরকার পতনের ঘোষণা দেয়। কিন্তু তার অবরোধের ডাকে মানুষ সাড়া দেয়নি। আন্দোলন ব্যর্থ হলে খালেদা ঘরে ফিরে যান।