সাতক্ষীরার আশাশুনির বড়দল আফতাব উদ্দীন কলেজিয়েট স্কুলে কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্য রুখতে পাতানো নিয়োগ বোর্ড বন্ধের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন আশাশুনি উপজেলার বুড়িয়া গ্রামের মৃত জিয়াদ আলী সানার পুত্র মুকুল সানা।
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, আমি আশাশুনি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বড়দল আফতাব উদ্দিন কলেজিয়েট স্কুলের অভিভাবক সদস্য। প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন সুনামের সাথে পাঠদান করে আসলেও সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ পদ শূন হয়ে যাওয়ার পরে ক্রমশ অবনতির দিকে যাচ্ছে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ডা: মোখলেছুর রহমান কয়েকজনকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন পদে নিয়োগে কোটি টাকার বাণিজ্যের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। আর নিয়োগ বাণিজ্য সম্পন্ন করতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ২৭ অক্টোবর ২২ তারিখে স্মারক নং ও এম/৭৪/ম/১৪-১৭৮৪ এর পরিপত্রকে তোয়াক্কা না করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ১৩নং সিরিয়ালের জুনিয়র প্রভাষক বাবলুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান করে। ৫ ফেব্রুয়ারি ২৪ তারিখে ৩৭.০০.০০০. ০৭৪.০০২.০০১.২০২১.৫১ নং স্মারকে অধ্যকের দায়িত্বভার অপূর্ণ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করলে সে আলোকে ইং ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে ৩৭.০২.৪৭০০.০০০.০১.০০১.১৭.১৯৮৩ নং স্মারকে পরিচালকের কার্যালয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্ব প্রদান সংক্রান্ত চিঠি ইস্যু করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের মিশন বাস্তবায়ন করতে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ৫-৬টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে ১ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ওই টাকা হজম করার জন্য পাতানো নিয়োগ বোর্ড সম্পন্নের প্রস্তুতিও গ্রহণ করেছে তারা। এমনকি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ১০ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখের ৩৭. ০০. ০০০. ০৭৪. ০০২. ০০২. ২০১৬. ০৬ নংস্মারকের পরিপত্রের ২.২ নং ক্রমিক অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইট ও সম্ভব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি ব্যাপক প্রচার করার কথা ও ২.৩ নং ক্রমিকে আবেদন পত্র যাচাই বাচাইয়ের জন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নিয়ে কমিটি গঠন করার কথা বলা হলেও তা যথাযথ ভাবে করা হয়নি। এছাড়া উক্ত অনিয়মের বিষয়ে আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে যার মামলা নং- দেং-১৪৮/২৪।
তিনি আরো বলেন, নিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে ল্যাব সহকারী পদে বাইনতলা গ্রামের মিহির রঞ্জন সরকারের কাছ থেকে ১৪ লাখ, পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে বড়দল গ্রামের দিপীকা রানীর কাছ থেকে ১২ লাখ, ল্যাব সহকারী পদে বুড়িয়া গ্রামের খগেন্দ্র নাথের ছেলের জন্য ১০ লাখ, ল্যাব সহকারী পদে কিনুকাটি গ্রামের দীপঙ্কর ঢালীর ছেলের জন্য ১০ লাখ, সহ:প্রধান শিক্ষক পদে কৃষ্ণনগর গ্রামের কাজল সরকারের কাছ থেকে ৮লাখ, অফিস সহায়ক পদে বড়দল গ্রামে আশরাফুল শেখের কাছ থেকে ১৪ লাখ ছাড়াও অজ্ঞাত ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ওই সভাপতি এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।
তিনি প্রতিষ্ঠানের সুনাম ধরে রাখতে এবং পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে ওই কোটি টাকার মিশন বন্ধে পাতানো নিয়োগ বোর্ড বন্ধসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।